25 Nov 2024, 02:37 pm

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর চট্রগ্রামে এক জায়গায় কবরস্থ হলেন গণহত্যার শিকার ২১ নারী-পুরুষ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার শিকার চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ের ২১ নিরীহ নারী-পুরুষের বিক্ষিপ্ত সমাধিস্থল থেকে তুলে এক জায়গায় কবরস্থ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও সৈদালী নাগরিক ফোরামের আয়োজনে গণকবর স্থানাস্তর করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা চেয়াম্যান জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির হোসেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যন কবির নিজামী, ইউপি সদস্য ইয়াসিন উল্লাহসহ গণহত্যায় নিহতদের আত্মীয় স্বজন।

সৈদালী নাগরীক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিননাহ বলেন, ১৯৭১ সালে আমার বয়স ১৩, আমি নিজ চোখে দেখেছি এই নির্মম হত্যাকাণ্ড। ওই হত্যাকাণ্ডে ২৩ নীরিহ নারী পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। তখন নিহতদের কবর দেয়া কিংবা জানাজা পড়ার সুযোগ ছিলনা। যার লাশ যেখানে ছিল সেখানেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সরকারি অর্থায়নে সৈদালী সিন্ধুরভিটা কবরস্থানে তাদের কবর স্থানাস্তর করা হয়ে। এরা হলেন- সৈদালী গ্রামের মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম (হোরা মিয়া) , আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মকছুদ আহম্মদ, নজীর আহমদ, সুলতান আহমদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহমদ, আবদুল মালেক, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, সামছুল আলম ভূইয়া, নুরুল আলম ভূইয়া, ফকির আহমদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসনের জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা  শহীদ বজলুর রহমান।

এছাড়া জোবেদা খাতুন ও জায়েদ আলীর কবর পূর্ব থেকেই এই কবরস্থানে ছিল।

মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের উপর মিরসরাইয়ের মুক্তিযোদ্ধারা ফেনাপুনি মাজার ও হাজারী দিঘী এলাকায় দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে হানাদার বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

তারা যাত্রা বিরতি করে ও বড়তাকিয়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। সৈদালীর পুরো গ্রাম আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নারী-পুরুষ হত্যা করে ও যুবতীদের ধর্ষণ করে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জানান, পত্রপত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যমে সৈদালীতে বিক্ষিপ্ত গণকবর আছে জানার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গণকবরগুলো একত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর জন্য জমিও ক্রয় করতে হয়েছে। এখানে আরও কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলোও পরবর্তীতে আমরা সম্পন্ন  করবো।

মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন জানান, উপজেলা পরিষদের ৬ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তায় এই গণকবর স্থানান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের জন্য একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 14609
  • Total Visits: 1306279
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২২শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, দুপুর ২:৩৭

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018